বুধবার, ২২ জুন ২০১৬ ০৭:০৬ ঘণ্টা

পেটে গ্যাস হলে কি করবেন?

Share Button

পেটে গ্যাস হলে কি করবেন?

সময় সময় সবারই পেটে গ্যাস একটু-আধটু হয়। গ্যাস নিষ্ক্রমণও হয়। কিন্তু অনেক সময় গ্যাসের সমস্যা এত তীব্র হয় যে বিব্রতকর হয়ে ওঠে ব্যাপার-স্যাপার।

গ্যাস হওয়ার দুটি কারণ
খাওয়ার সময় বা পানের সময় বাতাস গলাধঃকরণ করলে এবং ক্ষুদ্রান্ত্রে খাদ্যের আঁশ ভেঙে গেলে গ্যাস উৎপন্ন হয়। হাইড্রোজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইড—এ দুটো পরে মিথেন গ্যাস ও সালফারে পরিণত হয়। বৃহদান্ত্রের জীবাণুগুলো এ পরিবর্তনে সহায়তা করে।

কতটুকু গ্যাস হলে স্বাভাবিক
দিনে ১৫ থেকে ২০ বার গ্যাস নিয়ন্ত্রণ হলে তা স্বাভাবিক। এটি পরিপাকতন্ত্রের স্বাভাবিক ক্রিয়া। পেটের বিভিন্ন অসুখ, যেমন—সিলিয়াক ডিজিজ, ইরিটেবল বাউয়েল সিনড্রোমের মতো ভারী শব্দের অসুখের সংকেত হতে পারে, আবার না-ও হতে পারে।

প্রতিদিন যে গ্যাস হয়, তা কমাতে কিছু পরামর্শ

খাবেন ও পান করবেন ধীরে
খাবার চিবিয়ে খেতে হবে খুব ভালো করে। পানীয় বা স্যুপ দ্রুত গিলে ফেলা ঠিক নয়। খাবার চিবিয়ে খাওয়ার সময় কথা খুব কম বলা উচিত, মুখ বন্ধ করে চর্বণ করা ভালো। তাহলে বাতাস ভক্ষণ করা বন্ধ হবে।

স্ট্র দিয়ে তরল পান করা ঠিক নয়
স্ট্র দিয়ে পান করলে বায়ু ভক্ষণ হয় এবং এতে পেটে গ্যাস হয়।

চুইংগাম ও ক্যান্ডি পরিহার করা ভালো
গাম চিবুলে ও ক্যান্ডি চুষলে বাতাস ঢোকে পেটে।

কোমল পানীয় পরিহার করা উচিত
সোডা পানের বিপক্ষে অনেক কারণ রয়েছে। গ্যাসের সমস্যা রোধে এটি পরিহার করা উচিত।

ডেঞ্চার যে ঠিকমতো লেগেছে, তা নিশ্চিত হওয়া ভালো
মুখের নকল দাঁত বা ডেঞ্চার হালকাভাবে লাগানো থাকলে বাড়তি লালা গিলতে হয়। সে সঙ্গে বাড়তি বাতাস বুদবুদ যায় পেটে।

ধূমপান বর্জন
বিড়ি-সিগারেট পান করলে কেবল যে বাতাস ও ধোঁয়াই ফসুফুসে যায় তা নয়, পাকস্থলীতেও বাতাস যায়।

ব্যায়াম 
মাঝারি ব্যায়াম, যেমন—রাতে আহারের পর ১০ মিনিট হাঁটা পরিপাকতন্ত্রকে দ্রুত গ্যাস বের হতে সাহায্য করে। রাতে খাবারের পর একটু হাঁটুন।

দুধ হজমে সমস্যা বা গ্যাস
অনেকের দুধ খেয়ে হজম হয় না। তাঁদের জন্য ল্যাকটেজ সাপ্লিমেন্ট। পুরোনো পরিন ও দই তাঁরা গ্রহণ করতে পারেন।

খাদ্য গ্রহণ ধীরে ধীরে বদলানো
বেশি করে ফল, শাকসবজি, শুঁটি, মোটা শস্য গ্রহণ শুরু করলে পরিবর্তনটি ধীরে ধীরে করা ভালো। কালক্রমে এসব খাদ্য গ্রহণ বাড়ানো গেলে অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়বে। দ্রবণীয় আঁশকে ভাঙতেও সক্ষম হবে।

পেটে বেল্ট না রাখা
আঁটসাঁট প্যান্ট ও বেল্ট পেটকে চাপে, হজমের নানা সমস্যার সৃষ্টি করে। এ ছাড়া পেট গ্যাসে ফুলে যায়। গ্যাস নির্গমন বিব্রতকর। তবে পরিপাকতন্ত্রের সহজ স্বাভাবিক ক্রিয়া এটি। সামান্য কিছু পদক্ষেপ নিলে সমস্যা কিছু লঘু হয়। কিন্তু অনবরত বায়ু হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

লেখক : অধ্যাপক ও ডিরেক্টর ল্যাব সার্ভিস, বারডেম